সংবাদ আপডেট

সিলেট জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠে
সিলেট জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর ভাষ্য, দেশে হত্যা–ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার দিকে নজর নেই তাঁদের। সিলেট নগরের তালতলা এলাকার রেজিস্ট্রারি মাঠে আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে হত্যা ধর্ষণ বেড়েছে। পত্রপত্রিকা খুললেই প্রতিদিন হত্যা-ধর্ষণের খবর। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। প্রকাশ্যে গুলি করে কমিশনারের স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। এতে এক নিরীহ সাধারণ ছাত্রীও মারা গেছেন। প্রতিদিন এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে।

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

এসব বিষয়ে পুলিশ উদাসীন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ কিন্তু তারা ব্যস্ত রাজনীতি ও দুর্নীতি করতে। পুলিশের আইজি রাজনৈতিক নেতার মতো কথা বলছেন। ডিএমপি পুলিশ কমিশনার শিষ্টাচার পর্যন্ত জানেন না। তাঁর শিক্ষা কোথায়, কোন শিক্ষায় তিনি শিক্ষিত হয়েছেন, জানা নেই। খালেদা জিয়া সম্পর্কে শিষ্টাচারবহির্ভূত কটূক্তিমূলক মন্তব্য করেছেন, সেটির আমরা ধিক্কার ও নিন্দা জানাই।’

বিএনপির এই নেতার দাবি, সরকার দেশে মেগা উন্নয়নের নামে মেগা দুর্নীতি করছে। ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু ৩০ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কর্ণফুলী টানেল, উড়ালসেতুগুলোতেও একই অবস্থা। বিচার বিভাগ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এই সরকার দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। বিচার বিভাগও আজ স্বাধীন নয়। ডিসি, এসপি, প্রশাসন আর আইন মন্ত্রণালয় যেভাবে চায়, সেভাবে বিচার–জামিন হয়।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য, স্বাধীনভাবে বসবাস করতে, নির্ভয়ে কথা বলতে মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার পরই আওয়ামী লীগ জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আওয়ামী লীগ নিজেদের প্রয়োজনে ১৯৭২ সালে সংবিধান সংযোজন-বিয়োজন করে ছিন্নভিন্ন করেছিল। প্রথমে বিশেষ ক্ষমতা আইন, জরুরি অবস্থা বাতিলের পর বাকশাল গঠন করেছিল। তাদের দুঃশাসনের কারণে ১৯৭৪ সালে দেশে দুর্ভিক্ষ এসেছিল। পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে দেশকে ধ্বংসস্তূপ থেকে তুলে এনেছিলেন।

সরকারকে হটাতে ইতিমধ্যে আন্দোলন শুরু হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সামনে বড় লড়াই রয়েছে। এতে আমাদের জয়ী হতে হবে। দানবীয় সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ও দেশের ১৮ কোটি জনসাধারণকে মুক্ত করতে হবে।’

সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হাসান, সহ–ক্ষুদ্র ও ঋণবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বগুড়া পৌরসভার মেয়র ও নির্বাহী সদস্য রেজাউল করিম বাদশা প্রমুখ।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসীনা রুশদীর। সকালে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে বিএনপির সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলন শেষে কাউন্সিলের ভোট গ্রহণ শুরু হয়। কাউন্সিলে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯ প্রার্থী। ১ হাজার ৮১৮ জন ভোটারের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার কথা রয়েছে।

কাউন্সিলে সভাপতি পদে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও আবুল কাহের চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পদে আ ফ ম কামাল, আলী আহমদ, ইমরান আহমদ চৌধুরী ও আবদুল মান্নান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মুজিবুর রহমান, লোকমান আহমদ ও শামিম আহমদ প্রার্থী হয়েছেন।

আলোচিত সংবাদ

বিজ্ঞাপন